দায়মুক্তি

শিক্ষা / শিক্ষক (নভেম্বর ২০১৫)

Fahmida Bari Bipu
  • ১৬
  • ৫০
আগুন আগুনঃ
‘ও সজল, আগুন লাগছে রে বাপ। আগুন লাগছে। পানি আন তাড়াতাড়ি। পুইড়্যা গেল, বেবাক পুইড়্যা গেল রে বাপ...’
‘মা, বাজান কই? বাজান?...’
‘তোর বাপজান ভিত্‌রে গ্যালো। আর বাইরাইলো না(বাহিরে আসলো না)। পানি আন, পানি...।’

কাগজের পাখিঃ
বিরক্তির সাথে নিউজপেপারে চোখ বোলাচ্ছিলেন ডাঃ আশফাক উদ্দীন। রোজ রোজ একই খবর।
সড়ক দূর্ঘটনায় সাত জনের প্রাণহানি, বেড়েই চলেছে ঢাকার যানজট, অজ্ঞাতপরিচয় তরুণীর লাশ উদ্ধার, শিক্ষক কতৃক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা...শহরে মানবন্ধন।
একই খবর। কোন বৈচিত্র নেই। এ যেন নতুন বোতলে পুরনো মদ বিক্রির চেষ্টা। মেজাজ খারাপ করে পেপার সরিয়ে রাখলেন একপাশে। এমনিতেই ঘুম হয়নি রাতে। আবার দেখেছেন স্বপ্নটা। এই স্বপ্নের হাত থেকে তার কি এই জীবনে মুক্তি মিলবে না?
সাইকেলের ক্রিং ক্রিং আওয়াজে চমক ভাঙলো। দুধওয়ালা এসেছে। কাজের ছেলেটাকে ডাক দিলেন দুধ নিয়ে যেতে। হাজার অনিয়মেও এই একটি নিয়ম বহাল রেখেছেন তিনি। দুধ তার চাইই চাই। প্রায় লোকালয় বিবর্জিত এই এলাকায় ভাগ্যিস ভাল একটা কাজের ছেলে পেয়েছিলেন। ছেলেটা বড্ড কাজের। তার যা যা প্রয়োজন, ঠিকঠাক জোগান দিয়ে যাচ্ছে। এই দুধওয়ালাকে কোত্থেকে যেন জোগাড় করেছে। দুধের মান একেবারে একনম্বর। ঢাকায় বসে এই দুধ আশাই করা যায় না।
‘কেরামত মিয়া, খবর কি তোমার? আজ আসতে দেরি করলা কেন?’
‘একটু বাজার গেছিলাম স্যার। ছোড়াটার জন্য খাতা কিনতি।’
‘তোমার ছেলে স্কুলে যায়? বাঃ বেশ। পড়ালেখা করে তো ঠিকমত?’
‘কি কন স্যার? পোলা আমার বইএর উইপোকা। গিট্টু দিয়া লাইগা থাকে।’
সাইকেলের প্যাডল ঘুরিয়ে রওয়ানা দেয় কেরামত মিয়া। আশফাক উদ্দীন চেয়ে থাকেন তার পথের দিকে। মনের মধ্যে দোল দিয়ে যায় ভাসা ভাসা কত ছবি। ...আমাদের ছোট নদী চলে আঁকে বাঁকে...বাংলা বইয়ের পাতায় হাশেম খানের আঁকা হাসি খুশি ছেলে মেয়েদের মুখ...আর কাগজের পাখি। সালমা আপা বানাতে শিখিয়েছিলেন হাতের কাজ ক্লাসে। কি জীবন্ত ছিল সেই কাগজের পাখি! যেন এক্ষুনি ডানা মেলে উড়ে যাবে।
তার কৈশোরের নানা রঙের দোল-দোলানো কত শত ভাবনা সেই পলকা কাগজের ডানায় ভেসে হারিয়ে গেছে দূর দিগন্তে!

প্রথম পাপঃ
‘বাজান আমি হালের কাজ করুম না। আমি পড়ালেখা করমু। আমার খুব ভালা লাগে পড়তে।’
‘হেইডা ক্যামনে হইবো বাপ। আম্‌গো তো ওত ট্যাকাপয়সা নাই। একদিন না একদিন তো ছাইড়াই দেওন লাগবো। আমাগো চৌদ্দগুষ্টির কেউ স্কুল পাস দেয় নাই। তুই দিছিস বাপ। আর পড়নের কাম কি? অহন আমার লগে জমির কামেত মন দে বাপ।’
ঘাড় গুঁজে দাঁড়িয়ে থাকে সজল। নরম শরম ছেলে সে। বাবার মুখে মুখে তর্ক করে না। কিন্তু ঝড় বইতে থাকে মনের মধ্যে।
স্কুলের হেডমাষ্টার এসে কথা বলেন সজলের বাবার সাথে।
‘বুঝলা সজলের বাপ, তোমার ছেলে তো হীরা একটা। এই গ্রামে তো দূর, পাশের দু’দশটা গ্রামেও তোমার ছেলের সমতুল্য ছেলে একটাও নাই। না প্রাইভেট, না কোচিং, অথচ তোমার ছেলের রেজাল্ট দেখছো তুমি? আমি বোর্ড অফিসে খোঁজ নিছিলাম। তোমার ছেলের মার্ক জোগাড় করছি। দুই নম্বরের জন্য বোর্ড স্টাণ্ড করেনি তোমার ছেলে। তোমার ছেলে একদিন আমাদের সবার মুখ উজ্জল করবো। ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হওয়া তোমার ছেলের জন্য কোন বিষয়ই না।’
ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে সজলের বাবা আলতাফ উদ্দীন। শিক্ষার আলো বঞ্চিত তার দুই চোখে রাজ্যের বিস্ময়। হেডমাষ্টার স্যার এগুলো কি বলেন? ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হওয়া তার ছেলের জন্য কোন বিষয়ই না? তার বংশে পড়াশুনার নামই শোনেনি কেউ। সাত পুরুষ হালচাষ করে খেয়েছে। সেই একই বংশে জন্মে তার ছেলে কিভাবে পারলো পড়াশুনাকে এত ভালবাসতে?
সজল মুখ কালো করে ঘুরে বেড়ায় সারাদিন। তার দুই বন্ধু কলেজে ভর্তি হতে শহরে যাবে। সেও যেতে চায় তাদের সাথে। শহরের কলেজে পড়তে চায় সে। অনেক টাকার ব্যাপার। বাবা কোথা থেকে ব্যবস্থা করবে? বাবা তো তাকে আর পড়াতেই চায় না।
ওদিকে শান্তি নাই আলতাফ উদ্দীন এর মনেও। এমন একটা ছেলের পড়াশুনা তিনি বন্ধ করে দিবেন? তার যে মহা পাপ হবে! কিন্তু পড়াবেনই বা কিভাবে? কি আছে তার? সম্পত্তি বলতে বাপের রেখে যাওয়া অল্প কিছু জমি। তাও আবার তিন ভাইয়ের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা শেষে সামান্যই অবশিষ্ট আছে তার ভাগে। অসহায় চোখে তাকান জমিটুকুর দিকে। মনের মধ্যে খেলা করে হাজার ভাবনা।
কিছুদিন পরে এক রাতে কথা বলেন সজলের মা’র সাথে।
‘ভাবতাছি উত্তরের ধানী জমিটা বেইচা দিমু। ফসলপাতি তেমুন আসে না। কি কও সজলের মা?’
‘কি কন আপনি! উত্তরের জমি বেচলে আমরা খামু কি? বেচবেন ক্যান? ফসলপাতি এ বছর ভালা হয়নি, পরেরবার হইবো।’
‘কিছু ট্যাকা পয়সা হাতে থাকন ভালা। বিপদ-আপদ কি বইল্যা কইয়্যা আসে? হাতে কিছু ট্যাকা-পয়সা থাকলে ভরসা পাওন যায়।’
পাশের ঘরে বসে সজলের কানে আসে সব কথা। বাবা জমি বিক্রি করবে? সে জানে জমির দাম এখন অনেক চড়া। বাবাকেই বলতে শুনেছে অনেকবার। টাকার জন্য বাবা তাকে কলেজে ভর্তি করতে চায় না। অথচ জমি বিক্রি করে দেবে ভবিষ্যতের বিপদ-আপদের কথা ভেবে!
সজলের মনের মধ্যে কিসের যেন কালো ছায়া ঘিরে আসে। প্রথম পাপের নয় তো?

ভ্রান্তির অনলঃ
‘অ মা, আমি একটু আইতাছি।’
‘এত রাইত্তে কই যাইবি?’
‘আমার এক বন্ধুর কাছে একটা কাজ আছে। এক্ষুনি আইসা পড়ুম।’
বুকের ধুকধুকুনি নিত্য সঙ্গী হয়ে গেছে সেদিনের পর থেকে। সজল জানত বাবা তার টাকা-পয়সা কোথায় রাখে। অনেক নিরাপদ একটা জায়গা আছে বাবার। ঘুনাক্ষরেও কেউ জানতে পারবে না কখনো। একদিন বাবাই সজলকে বলেছিল এই জায়গার কথা। বাঁশের চোঙে টাকা ভরে মাটির দেওয়ালে ঢুকিয়ে আবার লেপে দিলেই হল। সিন্দুকের চেয়েও নিরাপদ কুঠুরি।
একদিন সেই পাপের ডাক অগ্রাহ্য করতে পারে না সজল। বাবার অনেক কষ্টের জমি বিক্রির টাকা সজল সরিয়ে ফেলে। চোঙাটা আবার রেখে দেয় আগের জায়গায়। যত্ন করে লেপে দেয় সরে যাওয়া মাটি।
অনেক টাকা। প্রায় পঞ্চাশ হাজারের মত। নিজের কাছে রাখার সাহস পায় না সজল। তার এক বন্ধুর কাছে টাকাটা আমানত রাখে। ঠিক করে একদিন বাড়ি থেকে পালিয়ে যাবে। শহরে গিয়ে কলেজে ভর্তি হবে। অনেক বড় হতে হবে ওকে। বাবাকে একদিন আবার ফিরিয়ে দেবে উত্তরের ধানি জমিটা।
কিন্তু অনুশোচনার অনল বড় কঠিন। ভীষণ তীব্র তার তেজ। এভাবে সে পারবে না বাবাকে ফাঁকি দিতে। থাক্‌, নাই বা হল তার পড়ালেখা। বাবার কথাই মেনে নেবে সে। হাল চাষ করবে। টাকাটা আবার রেখে দিবে আগের জায়গায়।
সেদিন টাকাটা ফেরত আনতেই বন্ধুর বাড়িতে যায় সজল। ফিরে এসে দেখে দাউ দাউ আগুন জ্বলছে ওদের বাড়িতে। উঠোনে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে কাঁদছে সজলের মা। সজলের চোখের সামনে পুড়ে খাক হয়ে যায় সবকিছু।
রাতে সজল বাইরে যাওয়ার পর সজলের বাবা ওর মাকে বলে,
‘বুঝলা সজলের মা, পোলারে পড়ামু আমি। আমার পোলা অনেক বড় হইবো। হেডমাষ্টার স্যার আমারে কইছেন। জমি আবার কেনা যাইবো। আমার পোলার ভবিষ্যৎ তো আর ফিরা আইবো না। সজলরে এখনো কই নাই। ওর বন্ধুরা যেদিন শহরে যাইবো তার আগের দিন দিমু ট্যাকাটা। কেমুন খুশি হইবো পোলাটা কও তো?’
রাতের খাওয়া শেষে কুপিটাকে একপাশে সরিয়ে রাখে সজলের মা। মনটা কেমন যেন অস্থির অস্থির লাগে। একটাই তো ছেলে। কোনদিন মুখ ফুটে একটা কিছু চায় নি। খেতে দিলে খাইছে, না দিলে কিছুই বলেনি। বুদ্ধি হওয়ার পরে প্রথম বাবার কাছে একদিন স্লেট আর চক চেয়েছিল। সেগুলো পেয়ে ওর খুশী কে দেখে! সারাদিন ঐ নিয়েই মেতে থাকে, নাওয়া খাওয়া ভুলে। শান্তশিষ্ট ছেলেটা পড়তে বসলে এক্কেবারে অন্য মানুষ। ওর খুশীর জন্য বাপ-মা হয়ে এর বেশী আর কীই বা করার সামর্থ্য আছে তাদের?
তবু উত্তরের জমিটা অনেক বড় একটা অবলম্বন ছিল। সামনের দিনগুলো না জানি কিভাবে কাটবে!
সজলটা এখনো আসলো না। ওর বাপ গিয়ে শুয়ে পড়েছে। কতক্ষণ খাবার নিয়ে বসে থাকা যায়?
বাইরে অনেক বাতাস। সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতে ধরে আসে চোখের পাতা। হঠাৎ কেমন যেন গরম লাগতে থাকে। চোখ মেলে সামনে যেন বিভীষিকা দেখতে পায়। বাতাসে কুপি একপাশে পড়ে গেছে। আর তা থেকে সারা ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। কোনমতে ডাক দেয় সজলের বাবাকে। কাচা ঘুম ভেঙ্গে হতবুদ্ধির মত তাকিয়ে থাকে আলতাফ উদ্দীন। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। কিচ্ছু করার উপায় নাই। প্রাণ নিয়ে বেরিয়ে আসে বাইরে।
‘সজলের মা, ট্যাকা তো ঘরে আছে। হায় হায়! কী করি ওহন! ও আল্লাহ্‌! আমি ভিত্‌রে যাই। ট্যাকা পুইড়া যাইবো।’
‘আপনে যাইয়েন না। ট্যাকা পুড়বো না। মাটির ভিত্‌রে আছে।’
না না...যদি পুইড়া যায়। আমি ভিত্‌রে ঢুকমু।’
আলতাফ উদ্দীন কিচ্ছু শোনে না। তার উপরে যেন ভূত ভর করে। জোর করে ভিতরে ঢুকে পড়ে। ঠিক তখনই প্রচণ্ড শব্দে ঘরের চালা ভেঙ্গে পড়ে।
ততক্ষণে ছুটে এসেছে আশেপাশের বাড়ির সবাই। যে যেভাবে পারে পানি ঢালতে থাকে। ততক্ষণে সব শেষ। পুড়ে অঙ্গার হয়ে যাওয়া আলতাফ উদ্দীনের লাশ ভেতর থেকে নিয়ে আসা হয়।
সজলের মা পাগলের প্রলাপ বকতে থাকে,
‘কত কইলাম, ঢুইকো না। ট্যাকা পুড়বো না। শুনলো না আমার কথা। জমি বিক্রি করছে। সজলরে পড়াইবো। ও আল্লাহ্‌...সব পুইড়া গেল, সব শ্যাষ হইয়া গেল...’
বাকরুদ্ধ পাথর হয়ে যাওয়া সজলের হাতে ধরা টাকার থলিটা মাটিতে পড়ে যায়।

বিষম সে দায়ঃ
জীবন থামতে জানে না। এটাই নাকি জীবনের বৈশিষ্ট্য!
মাটির সেই খুপুরি ভেঙ্গে টাকা পাওয়া যায়নি সেদিন। মার জীবনের শেষদিন পর্যন্ত সজল বলতে পারেনি সে টাকার কথা। ভীষণ প্রয়োজনের মুহুর্তেও নয়। জীবন বাঁচাতে ঠাঁই নিতে হয় মামাদের সংসারে। জীবনের সেই অধ্যায়ের কথা মনে করতে মন চায় না। ভেবেছিল আর কোনদিন পড়াশুনার নাম মুখেও আনবে না। কিন্তু ভাগ্য তাকে গিঁট দিয়ে রেখেছে যার সাথে, তাকে সে ছুটাবে কিভাবে?
সজলের স্কুলের হেডমাষ্টার চেষ্টা তদবির করে ওকে একটা শিক্ষাবৃত্তি জোগাড় করে দেন। কষ্টকে নিত্য পুঁজি করে পড়াশুনা করে সে। পদে পদে আসে বাধা। থেমে যেতে চায় সবকিছু। আবার উঠে দাঁড়ায় ভাগ্য। ভাগ্য তাকে ছাড়বে না। পড়াশুনা তাকে করতেই হবে। অসামান্য মেধার পরিচয় দিয়ে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে সজল। তারপরের টুকু পুরোটাই ইতিহাস। তার মামাদের আচার-আচরণ পুরোপুরি বদলে যায়। মার প্রতি বিশেষ সম্মান দেখাতে শুরু করে সবাই। এত প্রতিকূলতাকে জয় করে এভাবে যে নিজেকে প্রমান করা সম্ভব, এ যেন কেউ কল্পনাই করতে পারেনি।
পাশ করে সরকারী চাকরী পেয়ে মাকে নিয়ে আসে নিজের কাছে। জীবনের শেষ ক’টি নিঃশ্বাস মা তার কাছেই ফেলে যায়।

উঁইপোকাঃ
‘এই তুই কে রে?’
‘স্যার, ও হল দুধওয়ালার ছেলে। ওর বাবা আজ আসে নাই।’ কাজের ছেলেটা জানায়।
‘কি রে স্কুলে যাস নাই আজকে?’
‘স্কুলে আর যামু না। নাম কাটায় দিছে।’ মাথা নীচু করে বলে ছেলেটা। চলে যায় ধীর পদক্ষেপে।
আশফাক উদ্দীন কাজের ছেলেটাকে বলে ওর বাবাকে ডেকে পাঠায়। সঙ্গে সঙ্গে সে হাজির হয়। সাথে তার ছেলে।
‘স্যার, এ্যাই কি কুনো গণ্ডগোল করছে?’
‘আরে না। তোমার ছেলের নাকি নাম কাটিয়ে দিয়েছো স্কুল থেকে? কেন? তোমার ছেলে না পড়তে ভালবাসে?’
‘স্যার গরীবের পোলার আর পড়া! আজ দুইমাস হইল তিনটা দুধেল গাভীর একটা মইরা গেছে। হঠাৎ বলা নাই, কওয়া নাই এক রাইতের ভিতর মুখে ফেনা তুইল্যা গরুটা মইরা গেল। আরো দুইখান পোলাপান। সবার মুখে খাওন জোটামু না এরে পড়ামু?’
আশফাক উদ্দীন চেয়ে থাকেন ছেলেটার দিকে। বড় বড় চোখ দুটিতে রাজ্যের কৌতুহল। তাকে আপদমস্তক নিরীক্ষণ করছে। অনেক আগের একটা কিশোরের মুখ তার মনের কোণে ভেসে ওঠে। আয়নায় দেখা তার নিজের মুখ!
‘কি রে তুই নাকি উঁইপোকা? গিট্টু দিয়ে লেগে থাকতে পারবি তো? গিট্টু ছাড়া যাবে না কিন্তু।’
ছেলেটা কিছু বুঝতে পারে না। মাথা চুলকাতে থাকে।
‘অনেক পড়তে হবে। পারবি তো?’
ছেলেটা কিছু একটা আশায় আশান্বিত হয়ে ওঠে। খুশীতে দাঁত বের করে ফেলে।
আশফাক উদ্দীন এগিয়ে যান তার আলমারি টার কাছে। যেখানে গচ্ছিত রেখেছেন তার এত বছরের বিষম কঠিন এক দায়। আনন্দিত পায়ে দ্রুত এগুতে থাকেন তিনি। চোখের দু’কূলে প্লাবন নামতে চায়। আজ কাঁদবেন না তিনি। আজ তার খুশির দিন।

আজ যে তার দায়মুক্তির দিন।।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এফ, আই , জুয়েল # গভীর চিন্তার বেশ সাবলীল বর্ননা ----, অনেক সুন্দর একটি গল্প ।।
অনেক ধন্যবাদ জুয়েল ভাই। আপনার এই হ্যাশ ট্যাগ দিয়ে মন্তব্যের রহস্যটা কি একটু জানাবেন?
মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন .....আজ যে তার দায়মুক্তির দিন।...। ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার- এদের সবার কিছু না কিছু দায় থাকে। আহা, ইনারমত এরা সবাই যদি সেটা মনে রাখত! ভাল দিখেছেন শুভেচ্ছা রইল।
অনেক ধন্যবাদ। জি, ঠিকই বলেছেন। তবে দায় সব পেশার লোকেরই থাকে, সেটা ক'জন মনে রাখে! এখানে আমার গল্পের মূল চরিত্রের দায়টা ছিল একান্ত ব্যাক্তিগত।
আবু রায়হান মিছবাহ অনেক ভালো লাগলো...
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা আপনার জন্য।
গোবিন্দ বীন ভাল লাগল,ভোট রেখে গেলাম।পাতায় আমন্ত্রন রইল।
অনেক ধন্যবাদ।
হিসানুর রহমান রাকিব আপু আপনার লেখা পড়ে মুগ্ধ হলাম...... শেষের দিকটা আরও একটু ভালো হতে পারত আপনি চাইলে যাইহোক আপু কিছু মনে করবেন দোষ ধরলাম বলে....সর্বোপরি আপনার লেখাটার জন্য আপনাকে স্যালুট ।
কিছু মনে করার প্রশ্নই আসে না। আসুন, আমরা সবাই প্রত্যেকের লেখার সঠিক মূল্যায়ন করি। ভুলভাল খুশি করা মন্তব্যে আমরা আমাদের লেখনীকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো না। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে লেখাটি পড়ার জন্য।
সেলিনা ইসলাম গল্পের থিমটা অসাধারণ...! সজলই যে আশফাক উদ্দীন গল্পে রহস্যে রাখা হয়েছে! সজলের বন্ধুর বিশ্বস্ততা প্রমাণ করে বন্ধুত্বের বন্ধন এমনই হওয়া উচিৎ...! কিছু কিছু কথা বাবা মা গোপন করেন সন্তানকে সারপ্রাইজ দিতে। কিন্তু তারা একবারও ভাবেন না সন্তানকে দুশ্চিন্তায় রেখে যেমন তারা ঠিক করেন না! তেমনি কিছু কিছু সন্তান আছে বাবা মা আসলে কী ভাবছে তা না বুঝেই শেষটা না দেখে নিজেই একটা কঠিন সিদ্ধান্ত তাদের অগোচরে নিয়ে নেন! যা বাবা মা এবং সন্তান কারোর জন্যই শুভ হয় না! বেশ শিক্ষণীয় গল্প। আপনি সব সময়ই খুব ভাল লেখেন আপু। তবে এই গল্পে কিছুটা অযত্নের ছাপ আছে...! আরও একটু সময় দেয়া প্রয়োজন ছিল বলে মনে হয়। ভাল থাকুন আপনার জন্য রইল অনেক অনেক শুভকামনা।
ধন্যবাদ সেলিনা আপু। আমার মনের কথা বলেছেন ঠিকঠাক। আরো একটু বেশি সময় দেয়া প্রয়োজন ছিল। অন্য একটা কাজের তাড়ায় করছিলাম বলে তেমন একটা যত্নআত্তি করা হয়নি লেখাটায়। শেষের অংশটাতে অবশ্যই তাড়াহুড়ো ছিল। সমালোচনা করবেন আপু। আমি এটাকে খুব পজিটিভ দৃষ্টিকোণ থেকে নিতে পারি। আমার লেখাটা আমার কাছে ভাল লাগতে পারে, কিন্তু পাঠকের পড়ে কেমন লাগল সেটা অনেক বড় বিষয়, এক্ষেত্রে কোনরকম 'ইগো' সমস্যাতে ভুগি না আমি। অনেক অনেক শুভকামনা আপনার জন্য।
রেজওয়ানা আলী তনিমা চমৎকার!!!!
অনেক ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা আপনার জন্য।
Salma Siddika আমার কিন্তু খুব ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ সুন্দর লেখার জন্য। আমরা সবাই এভাবে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিলে সমাজটা আরো সুন্দর হতো।
ধন্যবাদ সালমা হায়েক। কেমন আছো তুমি? এ সংখ্যায় লেখা পেলাম না কেন? ব্যস্ততা ছিল বলা যাবে না কিন্তু।
মোকাদ্দেস-এ- রাব্বী চমৎকার
অনেক ধন্যবাদ।
রোদের ছায়া চমৎকার গল্প! খুব ভালো লাগলো পড়ে।
আপনাকে পাঠক হিসেবে পেয়ে আনন্দিত হলাম। শুভেচ্ছা জানবেন।

০১ ডিসেম্বর - ২০১৪ গল্প/কবিতা: ৬৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪